শাহরিয়ার জামান শাওন।।
১৪ বছর বয়সে কতটুকু স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারি আমরা? ঠিক এই বয়সটাতেই কেও একজন বিশ্বজয়ের জন্য স্বপ্ন বুনতে পারে তাও আবার একজন অবরোধবাসিনী হয়ে যে কিনা সমাজের অবরোধ ভেঙে বলাকার ন্যায় উড়তে চেয়েছিলো। কথা বলছি নড়াইলের মেয়ে ইফরাত জাহান ইশা ও তার Isha’s Creation নিয়ে।
২০২০ সালের ৮ অগাস্ট, বিশ্ব যখন করোনা মহামারিতে পর্যদুস্থ,ঠিক তখনই শিক্ষক বাবা মায়ের ছোট মেয়ে ইফরাত জাহান ইশা এবং বড় মেয়ে নূর জাহান ভূইয়া ইনা মিলে শুরু করে Isha’s Creation নামক এক অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে তারা হ্যান্ডক্রাফ্ট গহনা তৈরি করে বিক্রি করতো। বোন ইনা ব্যস্ততার জন্য পুরোপুরি সময় না দিতে পারলেও মাতৃময়ী সাপোর্ট সবসময় ছিলো ইশার সাথে। মায়ের দেওয়া ২০০০ টাকাকে পুজি করে ইশার পথ চলা। সেই পথ চলাতে আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব সহ প্রতিবেশীদের কটাক্ষ ও অসহযোগীতা যখন ছোটবোন ইশাকে দুমড়েমুচড়ে দিচ্ছিলো,ঠিক তখনই বড়বোন ইনার মাতৃসহ শাসন ও সাহসে ঘুরে দাড়ায় ইশা এবং সফল হয় তার ২ বছরের পথ চলা যে কণ্টকাকীর্ণ পথচলায় পুরো নড়াইলসহ তার খ্যাতি ছড়িয়েছে সারাদেশে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র থেকেও তার গহনার অর্ডার এসেছে তিনবার। দেশের প্রায় ৪০ টি জেলাতে তার গহনার চালান পৌঁছেছে। মায়ের সেই ২০০০ টাকা পুজি করে মাত্র দু বছরের মাথায় সেই ছোট্ট মেয়েটি প্রায় ৩ লক্ষ টাকা মোট সেল করে মা কে ডায়মন্ডের রিংও কিনে দিয়েছে। নিজের সকল খরচ চালানোসহ নানা সামাজিক কাজের সাথেও যুক্ত আছেন Isha’s Creation এর স্বত্বাধিকারী এবং নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী ইফরাত জাহান ইশা। ইশা বলেন বাবা-মা, বোন,আত্মীয়স্বজন, শিক্ষক, সিনিয়র জুনিয়র, বন্ধুদের উৎসাহ আমার পথচলার অনুপ্রেরণা।
বিল গেটস এর উক্তি টেনে ইশা বলেন
“Your most unhappy customers are your greatest source of learning.”
সম্প্রতি, তার মতো আরে উদ্দোক্তা সৃষ্টির জন্য ইশা ২০ জন মেয়েকে গহনা তৈরি শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে এবং তিনি আশা করছেন এর মাধ্যমে এসকল মেয়েদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ইশার এমন সাফল্য এবং অদম্য পথচলাকে অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে দেখছে তার পরিচিতজনেরা।