নাজিম উর রহমান
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই চাঙা মনোভাব দেখা দিচ্ছে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন নেতাকর্মীদের আনাগোনা বেড়েছে বেশ। অন্যদিকে ব্যস্ত সময় পার করছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। নিয়মিতই ধরণা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। প্রত্যেক সম্মেলনের আগেই কারা কারা নতুন নেতৃত্বে আসতে পারেন তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-গুঞ্জন। বিশেষ করে সংগঠনের প্রধান দুটি পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কারা আসতে পারেন সেদিকে থাকে সবার দৃষ্টি।
দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের একটি ঐতিহ্য আছে।কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে হবে গুঞ্জন উঠলেই নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব দেখা যায়। এখানে একদিকে যেমন নবীন-প্রবীণের মেলবন্ধন হয় আবার তেমনি বেরিয়ে আসে নতুন নেতৃত্ব।
আগামী ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বহুল প্রতীক্ষিত ৩০ তম সম্মেলন । আর আগামী ৩ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ দুই সম্মেলনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে সাবেক কয়েকজন নেতাকে নেতৃত্ব বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যারা নেতৃত্বের যোগ্যতায় এগিয়ে থাকবেন তারাই শীর্ষপদে আসীন হবেন। সে ক্ষেত্রে একাডেমিক ও সাংগঠনিক যোগ্যতা, দক্ষ, শিক্ষার্থীবান্ধব এবং দলের প্রতি নিবেদিতরাই এ পদে আসবেন। বিতর্কিতরা যেন এ গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে না পারেন সে বিষয়ে তাগিদ রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনের সঙ্কটময় মুহূর্তে সংগঠন সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবে কি-না এটিও বিবেচনায় থাকবে।
সম্মেলনের শেষে জানা যাবে গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনী বছরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনটির নেতৃত্বে আসছেন কারা। বরাবরই সম্মেলনের ঠিক আগে আগে সব হিসাব-নিকাশে এগিয়ে থাকা প্রার্থীদের নাম শোনা যায়। কিন্তু এবারের সম্মেলন ব্যতিক্রম। এখনও পর্যন্ত কোনো সূত্রই নিশ্চিত করতে পারছে না কারা আসছেন নেতৃত্বে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবার নেতৃত্ব বাছাই প্রক্রিয়া তদারকি করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এবার ছাত্রলীগের নেতৃত্ব বাছাইয়ে পারিবারিক পরিচিতি, নিয়মিত ছাত্রত্ব, সংগঠনের জন্য ত্যাগ এবং এলাকাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জরুরি হয়ে উঠবে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টও। সে বিবেচনায় বেশ কয়েকজন প্রার্থীর নাম বেশ জোরেসোরেই উচ্চারিত হচ্ছে।
গত কয়েকটি সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বে এসেছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এছাড়াও ছাত্রলীগের সম্মেলনে অঞ্চল একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। ঐতিহ্য বলছে, বৃহত্তর বরিশাল এবং ফরিদপুর অঞ্চল থেকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় নেতৃত্ব রাখা হয়। এবার খুলনা, রংপুর ও চট্টগ্রাম থেকেও নেতৃত্ব নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
নেতৃত্বের দৌঁড়ে এসব অঞ্চলের যেসব নেতারা এগিয়ে আছেন তাদের মধ্যে
চট্টগ্রাম বেল্ট থেকে রয়েছেন বর্তমান ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম,কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী।
উত্তরবঙ্গ বেল্ট থেকে আলোচনায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, ।
বরিশাল বেল্ট থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান),ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার,উপ-বিজ্ঞান সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়।
ময়মনসিংহ বেল্ট থেকে আলোচনায় আছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক শেখ সাঈদ আনোয়ার সিজার ।
খুলনা বেল্ট থেকে রয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাধন।
ফরিদপুর বেল্ট থেকে আলোচনায় আছেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত।
ঢাকা বিভাগ থেকে আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আহসান পিয়াল, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক মোঃইরফানুল হাই সৌরভ