#40bcs#cadre#bcs#exam#job

ছোটবেলায় বলতাম – ‘হবো বাবার মতো বড়’ ।৪০তম বিসিএস।

নাজিম উর রহমান

গত ৩০ মার্চ ৪০ তম বিসিএসের ফল প্রকাশিত হয় ।৪০তম বিসিএসে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে পিএসসি।যারা ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি সিরিজ প্রতিবেদন তৈরি করছে মর্নিং ট্রিবিউন । আজ হচ্ছে তার পনেরতম পর্ব।
আজকে আমাদের সাথে আছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব। যিনি ৪০তম বিসিএসে একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার। আজকের সাক্ষাৎকারে তিনি তার নিজের অতীত কর্মজীবন আর অধ্যবসায়ের গল্প তারপর বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যে জার্নি এবং কর্মক্ষেত্রে তার আগামীর কর্ম পরিকল্পনা সব তুলে ধরেছেন।
মর্নিং ট্রিবিউনঃ জীবনের মূলমন্ত্র কি ছিল আপনার?
সাদমান সাকিবঃ Honesty is the Only Policy (সততাই একমাত্র পন্থা)”।
এছাড়াও আমার পরমপ্রিয় বিদ্যাপীঠ রংপুর ক্যাডেট কলেজ এর মূলমন্ত্র – “জ্ঞানই শক্তি” আর এর ৩টি হাউজের ৩টি মূলমন্ত্র – “মোরা নির্ভীক”, “বিজয়ই লক্ষ্য” এবং “সংগ্রামে দুর্জয়” আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করে।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ গ্রামের বাড়ি, বেড়ে ওঠা কোথায়,আপনার বাবা কি চাকুরি করতেন না ব্যবসা? তাঁর প্রভাব কতটুকু আপনার জীবনে?

সাদমান সাকিবঃ আমার বাড়ি নীলফামারী জেলার সদর উপজেলায়। আমার জন্ম এখানেই, প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এখানেই লেখাপড়া করেছি।
আমার বাবা একজন চিকিৎসক। তিনি ৮ম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। তিনি নীলফামারী জেলার সিভিল সার্জন ছিলেন এবং সবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান।
আমার জীবনে আমার বাবার প্রভাব অপরিসীম। আমি অনেক ভাগ্যবান যে আমার জীবনের সর্বক্ষেত্রে অন্যতম রোল মডেল হিসেবে আমার বাবাকে পেয়েছি। ‘বড় হয়ে কী হতে চাও’-ছোটবেলায় এমন প্রশ্নের উত্তরে আমিও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মতো বলতাম – “হবো বাবার মতো বড়”। এক্ষেত্রে আমি আমার বাবাকে নিয়ে একটু বলতে চাই – আমার বাবা নীলফামারীর পঞ্চপুকুর হাইস্কুলে লেখাপড়া করেন। তিনি ছিলেন সেই সময়ে অত্র এলাকার প্রথম রেসডেন্সিয়াল স্কলারশিপ প্রাপ্ত ব্যাক্তি। পরে এসএসসি ও এইচএসসি তে তাঁর উজ্জ্বল মেধার স্বাক্ষর রেখে ১৯৭৯ সালে একই সাথে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে (DMC-K35 Batch) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পড়ার সুযোগ পান। বুয়েটে ভর্তি হয়ে ১ মাসের মতো ক্লাসও করেছিলেন, পরে লক্ষ্য পরিবর্তন করে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চলে যান চিকিৎসাবিদ্যা পড়ার উদ্দেশ্যে। ছোট বেলা থেকে আমিও চেষ্টা করেছি বাবার পথেই হাঁটার। ফলস্বরূপ আমার বাবা-মা’র অক্লান্ত পরিশ্রম ও আল্লাহ’র অশেষ রহমতে আমি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা (২০০৫) এ সমগ্র রাজশাহী বিভাগে মেধাতালিকায় ৩য় স্থান অর্জন করি, এসএসসি পরীক্ষা (২০১১) তে গোল্ডেন জিপিএ ৫.০০ পেয়ে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে মেধাতালিকায় (ট্যালেন্টপুল) ১ম স্থান অর্জন করি এবং এইচএসসি পরীক্ষাতেও (২০১৩) গোল্ডেন জিপিএ ৫.০০ পেয়ে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত হই। অতঃপর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাই এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়েও (বুয়েট) চান্স পাই। অবশেষে বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই এবং ২০১৮ সালে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করি।
ছোটবেলা থেকেই বাবাকে দেখেছি নিজের সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে সারা দিনরাত মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত থাকতে। আমার জীবনে বাবাকে পেয়েছি সততা, আদর্শ ও ন্যায়পরায়ণতার বিমূর্ত প্রতীক হিসেবে। তাঁকে দেখেই অনুপ্রাণিত হয়ে একসময় সিদ্ধান্ত নিলাম, তাঁর মতোই দেশের জন্য ও মানুষের জন্য সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করব, তবে তা বৈশ্বিক মঞ্চে। এভাবেই সারা বিশ্বে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করার ও বহির্বিশ্বে আমার দেশের স্বার্থ সমুন্নত করার মহান ব্রত বুকে ধারণ করে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় ১ম পছন্দ পররাষ্ট্র ক্যাডার দিয়ে অবতীর্ণ হলাম, এবং আল্লাহতা’আলার অশেষ রহমতে জীবনের প্রথম বিসিএস এই পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলাম। গত ১ নভেম্বর ২০২২ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারি সচিব হিসেবে গেজেটেড হওয়ার মাধ্যমে নতুন পরিচয় লাভ করলাম।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ আপনার পরিবারের কে কে আছে?

সাদমান সাকিবঃ আমার পরিবারে আমার বাবা, মা, আমার স্ত্রী এবং আমার ছোট বোন আছেন। আমার স্ত্রী ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস শেষ বর্ষের ছাত্রী, আমার ছোট বোন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে সদ্য এমবিবিএস পাস করেছেন এবং তাঁর স্বামী একজন চিকিৎসক যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের একজন ক্যাপ্টেন।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ শিক্ষাজীবন, স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ ভার্সিটি লাইফ নিয়ে আপনার স্মৃতিচারন? আপনার সেশন আর হল ছিল কোনটা?
সাদমান সাকিবঃআমি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত নীলফামারী শহরেই লেখাপড়া করেছি। নীলফামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন “জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০০৪” এ বাংলা কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সারা দেশে জাতীয় পর্যায়ে ১ম হয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করি। এরপর ২০০৫ সালে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় সমগ্র রাজশাহী বিভাগে মেধাতালিকায় ৩য় স্থান অর্জন করি। ২০০৬ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হই রংপুর জিলা স্কুলে। এরপর ২০০৭ সালে ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হই রংপুর ক্যাডেট কলেজে। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলো কেটেছে ক্যাডেট কলেজে। এখানে কঠোর শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার মাঝেও দিনগুলো স্মৃতির মণিকোঠায় উজ্জ্বল, কেননা এক ঝাঁক প্রাণপ্রিয় বন্ধু আর পিতৃমাতৃতূল্য শিক্ষক পেয়েছিলাম আমি। ক্যাডেট কলেজের স্মৃতি নিয়ে বলতে গেলে এক মহাকাব্য হয়ে যাবে। এখানে আমার উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে –
•​২০১১ সালে “আন্তঃক্যাডেট কলেজ সাহিত্য ও সংগীত প্রতিযোগিতা” তে বাংলা কবিতা আবৃত্তি তে দেশের সকল ক্যাডেট কলেজের মধ্যে ৩য় স্থান অর্জন করি
•​২০১২ সালে “আন্তঃক্যাডেট কলেজ সাহিত্য ও সংগীত প্রতিযোগিতা” তে বাংলা কবিতা আবৃত্তি তে দেশের সকল ক্যাডেট কলেজের মধ্যে ১ম স্থান এবং বাংলা বিতর্কে ১ম স্থান অর্জন করে “বেস্ট পারফর্মার ক্যাডেট ইন লিটারারি ইভেন্টস” ট্রফি অর্জন করি
•​ক্যাডেট কলেজ থেকে পাস আউট করার সময় ৩টি সম্মাননা পাই, সেগুলো হলঃ
১। বেস্ট অলরাউন্ড ক্যাডেট
২। বেস্ট ক্যাডেট ইন কালচারাল অ্যাক্টিভিটিজ ও
৩। বেস্ট ডিসিপ্লিন্ড ক্যাডেট
​এরপর ক্যাডেট কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে পা রাখলাম বুয়েট এর আঙ্গিনায়। আমি বুয়েট সিএসই – ২০১৩ ব্যাচ এর ছাত্র। এখানেও আমি নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করি এজন্য যে, বুয়েটের সিএসই বিভাগের শিক্ষকগণ আর ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব এবং অনুপ্রেরণা আমার সারা জীবনের পাথেয়। আমি বুয়েট এর আহসানউল্লাহ হলে থাকতাম। ক্লাস ও লেখাপড়ার বাইরে অবসর সময় বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়িয়ে, আড্ডা দিয়ে, মুভি দেখে, বিভিন্ন বই পড়ে কাটাতাম। বুয়েট লাইফেও বিভিন্ন আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি এবং পুরস্কার পেয়েছি। এরপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ তে এমবিএ প্রোগ্রামে (63E Batch) ভর্তি হই।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ কোন অভিজ্ঞতা যা আপনার জীবনকে পিছন থেকে সামনে নিয়ে আসে?
সাদমান সাকিবঃ আল্লার’র রহমতে আমি এপর্যন্ত জীবনের সব পর্যায়েই যেরকম লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, বেশিরভাগই অর্জন করতে পেরেছি। কোন কোন ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যর্থতা ছিল, কিন্তু কখনোই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হইনি বা পিছিয়ে পড়িনি। (যদিও ক্লাসে সবসময় পিছনের সারিতেই বসতে পছন্দ করতাম …হা হা হা)

মর্নিং ট্রিবিউনঃ কোন প্রতিকূলতার মুখামুখি হয়েছিলেন যা আপনার জীবনে শিক্ষনীয় হয়ে ছিল?
সাদমান সাকিবঃ নির্দিষ্ট করে এরকম কোন প্রতিকূলতার কথা বলতে পারছিনা। তবে জীবনে চলার পথে ছোট-বড় যত প্রতিকূলতাই এসেছে, সৃষ্টিকর্তার অশেষ দয়ায়, বাবা-মা’র দোয়ায়, আমার স্ত্রী’র অনুপ্রেরণায় এবং আমার হার না মানা মনোভাবের কারণে সেগুলো মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ সবাই তো সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে যায় আপনি কী গিয়েছিলেন?
সাদমান সাকিবঃ আমি আমার হলের কক্ষেই লেখাপড়া করতাম। লাইব্রেরিতে যাওয়া হয়নি খুব একটা।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ বন্ধুদের সাথে আড্ডা হতো, বিসিএস প্রস্তুতির সময় কোন গ্রুপ ছিল স্টাডির জন্য?
সাদমান সাকিবঃ আমি খুব সৌভাগ্যবান যে আমার জীবনে আমি খুব ভাল কিছু বন্ধু পেয়েছি, যারা আমার জীবনের বন্ধুর পথ গুলোতে এ নিঃস্বার্থভাবে পাশে থেকেছে। এদের মধ্যে যাদের লক্ষ্য ছিল বিসিএস, তাদের সাথে অনেক আড্ডা-আলোচনা হত বিসিএস নিয়ে। বিসিএস এর প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সময় কোন গ্রুপ স্টাডি করিনি। ভাইভার প্রস্তুতি নেয়ার সময় আমাদের ৪ জনের একটি গ্রুপ ছিল, যেখানে আমরা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইংলিশ স্পিকিং প্র্যাক্টিস করতাম এবং দেশ-বিদেশের সমসাময়িক বিভিন্ন ঘটনাবলি ও ভাইভার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি নিয়ে ইংরেজিতে আলোচনা করতাম।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ কখন থেকে বিসিএস পড়া শুরু করলেন?
সাদমান সাকিবঃ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এ যোগদান করার স্বপ্ন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষ থেকেই দেখতে শুরু করি, কিছু বইপত্রও কিনেছিলাম সেসময়। কিন্তু ৩য় ও ৪র্থ বর্ষের প্রচণ্ড লেখাপড়ার চাপে ভালভাবে পাস করতেই ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা হয়ে গিয়েছিল, তাই সেরকম সুযোগ পাইনি বিসিএস এর প্রস্তুতি নেয়ার। মূলত বিসিএস এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে। অতঃপর রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকাকালীন সময়েই ৪০তম বিসিএস এর জন্য আবেদন করি।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ বিসিএসের প্রিলি রিটেন ভাইভা নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা আর গাইডলাইন?
সাদমান সাকিবঃ​
বিসিএস প্রিলিমিনারি গাইডলাইন
-​ প্রিলিমিনারির সিলেবাস ডাউনলোড করে সিলেবাস সম্পর্কে ভাল ধারণা নিতে হবে।
-​বিগত বছরের (বিশেষ করে ৩৫তম থেকে ৪৪তম বিসিএস এর) প্রিলিমিনারি টেস্টের প্রশ্ন ভালভাবে স্টাডি করতে হবে এবং প্রশ্ন সম্পর্কে একটা ভাল ধারণা নিতে হবে
-​নিয়মিত মডেল টেস্ট দিয়ে প্রস্তুতি যাচাই করতে হবে এবং টেস্টের পারফরম্যান্স অনুযায়ী প্রস্তুতির স্ট্রাটেজি অ্যাডজাস্ট করতে হবে
-​শুধু পরিশ্রম করলেই হবেনা, স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে প্রস্তুতি নিতে হবে

বিসিএস লিখিত গাইডলাইন
-​বিগত সালের প্রশ্ন পর্যালোচনা করে পরিপূর্ণ ধারণা নিতে হবে
-​লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস ডাউনলোড করে সিলেবাস সম্পর্কে ভাল ধারণা নিতে হবে এবং প্রস্তুতিকালীন পুরো সময়টাতে সবসময় সিলেবাসের সাথেই থাকতে হবে, নয়তো অযথা অপ্রয়োজনীয় টপিক্স পড়ে সময় নষ্ট হতে পারে
-​সর্বদা একটা রুটিন মেইনটেইন করে ধৈর্যের সাথে প্রস্তুতি নিতে হবে
-​প্রচুর লেখার চর্চা করতে হবে
-​লিখিত পরীক্ষায় টাইম ম্যানেজমেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাই সময়ের দিকে খেয়াল রেখে উত্তরগুলো লিখতে হবে।
-​লিখিত পরীক্ষার মার্কসই ক্যাডার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিসিএস ভাইভা গাইডলাইন
ভাইভা পরীক্ষাটিকে একজন বিসিএস অ্যাসপিরেন্ট এবং একজন বিসিএস ক্যাডারের মধ্যে একটি স্ক্রিন হিসেবে কল্পনা করা যেতে পারে, কেননা এই পরীক্ষাটিতে ভালভাবে উৎরে গেলেই আপনি বিসিএস ক্যাডার হয়ে যেতে পারেন। তাই ভাইভা বোর্ড এর কাছে যে বিষয়টি মুখ্য, তা হল আপনার মাঝে অফিসারসুলভ গুণাবলী বিদ্যমান কিনা। এককথায়, আপনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত হওয়ার জন্য যোগ্য কিনা। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ভাইভার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ আপনার জীবনে আপনার মায়ের প্রভাব?
সাদমান সাকিবঃ আমার মা নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক। মা কে দেখেছি তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও সততা, আদর্শ, ন্যায়পরায়ণতা ও গভীর জীবনবোধের শিক্ষা দিতে, যে শিক্ষাটা আমিও তাঁর কাছ থেকেই পেয়েছি। আমি জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি, তা শুধু আমার মায়ের অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনাতেই সম্ভব হয়েছে। সারাজীবন ধরে তিনি ছায়ার মতো থেকে আমাদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি যত সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে এ অংশগ্রহণ করতাম, সবটাই আমার মায়ের জন্যই সম্ভব হয়েছে। তাই সবশেষে এটাই বলতে চাই যে, আমার জীবনের যাবতীয় অর্জন ও সাফল্য প্রকৃতপক্ষে আমার মায়ের সাফল্য।

মর্নিং ট্রিবিউনঃআপনার কর্মক্ষেত্রে নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা?
সাদমান সাকিবঃ নিজেকে একজন দক্ষ কুটনীতিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দেশের সেবা করতে চাই, মাতৃভূমির স্বার্থ সমুন্নত রাখতে চাই এবং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের পতাকা আরো উঁচুতে তুলে ধরতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে চাই।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ কোন কিছু কর্মকান্ড যা আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়েছিল বলে আপনি মনে করেন?
সাদমান সাকিবঃ সেরকম কিছু মনে পড়ছেনা।

মর্নিং ট্রিবিউনঃ বিসিএস যাদের একমাত্র গোল তাদের উদ্দেশ্য কি বলবেন?

সাদমান সাকিবঃ বিসিএস নিঃসন্দেহে দেশের জন্য কাজ করার অন্যতম একটি সুযোগ ও প্ল্যাটফর্ম দেয়। সেই সাথে এর সামাজিক মর্যাদা, নিরাপত্তা ও জব স্যাটিসফ্যাকশন উল্লেখযোগ্য। তাই, বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থীর সর্বপ্রথম পছন্দ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে, এটাকে একমাত্র গোল বানিয়ে ফেলা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং খানিকটা অবাস্তব সিদ্ধান্ত। বিসিএস এর জন্য দৃঢ় প্রত্যয় ও সংকল্প থাকতে পারে, তবে সেই সাথে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান যেসকল সেক্টরে কাজে লাগানো যাবে, সেদিকেও নজর দিতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *