মোঃ ফরিদুল ইসলাম (ফরিদ)।।
বিসিএস একটা চাকরি হলেও এটি একটি স্বপ্ন, একটি আবেগ। যারা বিসিএস দিতে আসে তারা চাকরির প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি আবেগতাড়িত হয়েও আসে। তাই এখানে সফলতার জন্য নিজের সর্বোচ্চটুকু দিতে হবে। কিছুদিন পরে হয়তো ৪৫ তম বিসিএস এর সার্কুলার পাবেন আপনারা। প্রথমেই আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইলো৷
বিসিএস যাত্রায় সফল হওয়ার জন্য আপনাকে জ্ঞানে, বুদ্ধিমত্তায়, পরিশ্রমে, আচরণে এবং কৌশলে পরিপাটি হতে হবে। যাহোক, এখন থেকেই লক্ষ্য নিয়ে নিজের দুর্বলতাগুলো দূর করে ফেলুন। বিশেষ করে বাংলা, ইংরেজিতে যথেষ্ট আধিপত্য থাকা টা জরুরী। বিসিএস এর মতো তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য নানামুখী প্রচেষ্টার বিকল্প নাই। আমার কাছে মনে হয়েছে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরী [শেয়ার করলাম যদি কারো উপকারে আসে]:
১. প্রথম কাজ হওয়া উচিত বিসিএস সম্বন্ধে ভালোমতো জানা।
> বিসিএস কী?
> বিসিএস ক্যাডার গুলো কী কী এবং কোনটার কাজের প্রকৃতি কেমন?
> আপনার মননশীলতার সাথে কোন ক্যাডার যায়??
>বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষার ধরণ কী?
> সিলেবাস কেমন এবং প্রশ্নের ধরণ কেমন হয়
এসব বিভিন্ন বই বা গুগল করে জেনে নেওয়া।
২. দ্বিতীয় কাজ হলো নিজের সময় অনুযায়ী নিয়ম করে পড়াশোনা করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে পড়াশোনা করার চেয়ে ভালো মানের বই ভিত্তিক প্রস্তুতি নেওয়া ভালো। আপনি যেটা পড়বেন সেই তথ্যসূত্রের নির্ভরযোগ্যতা থাকতে হবে শতভাগের কাছাকাছি। তাই এইক্ষেত্রে প্রতিদিন নিয়ম করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এ পড়ালেখা করে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয় বলে আমার ধারণা। অতএব, নিজের মতো পড়াশোনা করুন।
৩. সিলেবাস টা ভালো করে দেখে আপনার ভালোলাগার জায়গা গুলো মার্ক করে বেশি জোর দেওয়া। বাকি জায়গা গুলোতে যতটা সম্ভব ধারণা রাখা। তবে বাংলা, ইংরেজি তে শক্ত অবস্থান তৈরি করার কোনো বিকল্প নাই।
৪. সিলেবাস দেখার পর ভালো মানের (যেমন প্রফেসরস) একটা প্রশ্ন ব্যাংক কিনে বিগত সকল বিসিএস এর প্রশ্ন গুলো দেখে ধারণা নেওয়া যে প্রতি বিষয় কোন ধরণের প্রশ্ন গুলো আসে।
৫. সিলেবাস দেখার পরে মান বণ্টন ও সাবজেক্ট ধরে একটা টার্গেট ফিক্সড করা যে আপনার দ্বারা কোন কোন অংশে কত মার্ক উঠানো সম্ভব। অর্থাৎ ২০০ এর মধ্যে আপনি কোন জায়গাগুলোতে চেষ্টা করে ১২০+ মার্ক নিশ্চিত করতে পারবেন (নির্দিষ্ট মার্ক পাওয়াটা অবশ্য পরীক্ষার উপর নির্ভর করে যদিও অনেকটা)
৬. সময়ে সময়ে বাজারের নানা লেখক এর নানা বই না কিনে প্রথমেই প্রতি বিষয়ের জন্য কিছু নির্দিষ্ট বই সিলেক্ট করে নেওয়া। অবশ্যই নির্ভরযোগ্য বই হতে হবে। [আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে একটা বুকলিস্ট করে শেয়ার করবো প্রয়োজন হলে]
৭. বইয়ের তালিকা ধরে বিষয়ভিত্তিক বই গুলো কিনে নিজের মতো করে আস্তে আস্তে আগানো।
৮. প্রতিটি বিষয় মনোযোগ দিয়ে আত্মস্থ করা।
***প্রচলিত পদ্ধতিতে যেই নিয়মে পরীক্ষা হয় তার যৌক্তিকতা(যেমন- প্রিলি, রিটেন বা ভাইভা এর মান বণ্টন, পদ্ধতি ইত্যাদি) নিয়ে তর্কে না গিয়ে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে আগানো। এসব তর্কে গিয়ে আপনি কেবল আপনাকেই পিছিয়ে ফেলবেন প্রতিযোগিতা থেকে।
সবার জন্য শুভ কামনা থাকলো।
মোঃ ফরিদুল ইসলাম (ফরিদ)
৩৮ তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত
৪০ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশকৃত।