নাজিম উর রহমান।।
আবু বকর ৭০ বছর বয়সী একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী যিনি ক্লাং প্যারেডে পরিষ্কারকর্মী হিসাবে কাজ করেন। তিনি তার ক্রুদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ।আবু বকর তার জীবনের দীর্ঘসময় প্রবাসে কাটিয়ে দেন তার পরিবার আর সন্তানদের অনাগত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। আজ মর্নিং ট্রিবিউনে তার দীর্ঘ প্রবাস জীবনের পাওয়া না পাওয়ার গল্প তার সাক্ষাৎকারের ওঠে আসে।
আবু বকর বলেন, “২৭ বছর আগে আমি আমার মাতৃভূমি বাংলাদেশ ছেড়ে আসি, তখন আমার পাঁচ নাম্বার সন্তানের বয়স ছিল মাত্র ৬ মাস। তারপর আর দেশে যাইনি। আমি আমার পরিবারকে অনেক মিস করি এবং তারাও আমাকে মিস করে। কিন্তু আমার এ ত্যাগ তিতিক্ষা তাদের মঙ্গলের জন্য। এ সবই তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য।
আমি মালয়েশিয়ায় এসেছিলাম কারণ আমি শুনেছিলাম এখানে প্রচুর চাকরি রয়েছে। এমনকি যদি এটি কেবল এমন কাজই হয় যা অন্য কেউ করতে চায় না, তারপরেও আমি এটি করব। আমি গত ২৭ বছর ধরে সপ্তাহে ৭ দিন, বছরে ৩৬৫ দিন এটা করে আসছি। আমি একবারও অসুস্থতার ছুটি বা এমনকি একটি ছুটির দিনও উপভোগ করি নি।আল্লাহর রহমতে দিন কি দিন মনেহয় আমি এখন আরও শক্তিশালী হচ্ছি।”
এখানে আমার চাহিদা খুবই স্বল্প। আমি আমার উপার্জনের বেশির ভাগই আমার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেই। আমি খুব সকালে জেগে উঠি, তারপর আমি গোসল করি, নাস্তা করি ,তারপর আমি কাজে যাই, আবার আমি ফিরে আসি বাসায়, ঘুমানোর আগে আমি আমার পরিবারের সাথে কথা বলি, তারপর আমি ঘুমাতে যাই এবং পরের দিন একই রুটিন, এবং তারপরের দিনও। দেশের মত এখানেও আমি বেশ কিছু ভালো বন্ধু তৈরি করেছি।
দিনশেষে তার মুখে একটা তৃপ্তির হাসি থাকে কারন তার এক মেয়ে এখন বিচারক, আরেকজন ডাক্তার আর একমাত্র ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। তারা যা অর্জন করেছে তার জন্য আমি আমার মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।
এ বছরের ডিসেম্বরে তিনি তার বাড়ি যাবেন এবং অবশেষে তিনি তার পরিবারের সাথে আবার দেখা করবেন।তিনি অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন কারন এই প্রথমবারের মতো তিনি তার দুই নাতি–নাতনির সাথেও দেখা করতে যাচ্ছেন।কথা বলা শেষ হতে না হতেই তার চোখে দেখা দেয় প্রশান্তির অশ্রু।