অনলাইন ডেস্কঃ
লাটভিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাস ক্রয়ের ‘শর্ত লঙ্ঘনের’ অভিযোগ এনেছে গ্যাজপ্রম। যদিও সেই কথিত শর্ত লঙ্ঘনের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
গত সপ্তাহে ইউরোপে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে সক্ষমতার প্রায় ২০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ কমায় গাজপ্রম। এর আগে রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও গ্যাস সরবরাহ কিছুদিন বন্ধ রাখা হয়। আর এবার সেই গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করল প্রতিষ্ঠানটি।
লাটভিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির জন্য প্রতিবেশী দেশ রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। তবে গ্যাজপ্রমের এমন পদক্ষেপ লাটভিয়ায় বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে আশা করছে দেশটির সরকার।
এর আগে গ্যাজপ্রম জানায়, তাদের প্রধান পাইপলাইনে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে গ্যাস সরবরাহ আরো কমিয়ে দেওয়া হবে।
নর্ড স্ট্রিম-১ নামে পরিচিত রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের প্রধান পাইপলাইনে এই রক্ষণাবেক্ষণ কাজের কারণে উত্পাদন ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে। যার ফলে বর্তমানের চেয়ে গ্যাস সরবরাহ অর্ধেক কমে যাবে।
রাশিয়া সরবরাহ আরো কমিয়ে দিলে আসছে শীতের আগে ইউরোপের দেশগুলোর পর্যাপ্ত গ্যাস মজুদ করা কঠিন হয়ে পড়বে। শীতে ইউরোপের দেশে গ্যাসের ব্যবহার অনেক বেশি থাকে।
নর্ড স্ট্রিম-১ গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই সক্ষমতার চেয়ে অনেক কম গ্যাস উত্পাদন করছে। এ মাসেই রক্ষণাবেক্ষণ বিরতির কারণে ১০ দিনের জন্য উত্পাদন পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছিল।
এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া অথবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি আসার পর ইউরোপীয় কমিশন তার সদস্য দেশগুলোকে গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন বলেছেন, রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে গ্যাস সরবরাহ একদম পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে তার ‘সমূহ সম্ভাবনা’ রয়েছে।
গত বছর রাশিয়া তাদের গ্যাসের ৪০ শতাংশ ইইউকে সরবরাহ করে। কিন্তু দেশটি এবার জ্বালানিকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ ইইউর।
জার্মানি বলছে, গ্যাস সরবরাহ সীমিত করার প্রযুক্তিগত কোনো কারণ নেই। অপরদিকে রাশিয়া সতর্ক করে বলেছে, তারা সরবরাহ কমাতে পারে বা পুরোপুরি বন্ধও রাখতে পারে। তাদের এ হুঁশিয়ারির পর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আগামী সাত মাস গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়িন বলেন, রাশিয়া ইইউতে গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে এমন আশঙ্কা একটি ‘সম্ভাব্য চিত্র’।
গ্যাজপ্রমের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ ইউরোপের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য গ্যাসযুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া, যা ভাবা হয়েছিল এটা ঠিক তা-ই।’