
কক্সবাজার:কক্সবাজারের রামু উপজেলার উমখালীর মিঠাছড়ি হাজির পাড়ায় শাশুড়িকে হত্যার পর বাড়ির আঙিনায় মাটিচাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বিকেলে বাড়ির পাশে টিউবওয়েলের পাশ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গত শুক্রবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের উমখালী হাজিরপাড়া এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।
শাশুড়ির নাম মমতাজ বেগম (৬০)। ঘটনার দুদিন পর রোববার (১৭ জুলাই) সকালে বাড়ির আঙিনা থেকে নিহতের খণ্ড খণ্ড মরদেহ উদ্ধার ও অভিযুক্ত পুত্রবধূ রাশেদা বেগমকে (২৫) আটক করে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রোববার সকালে নিহতের ছেলে বাড়ির পাশে টিউবওয়েলে গেলে পাশে নতুন খোঁড়া মাটি দেখতে পায়। পরে মাটি খুঁড়ে তার মায়ের শাড়ি দেখে স্থানীয়দের জানায়।
পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে রামু থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা অবস্থায় নিহত মমতাজ বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে।
অভিযুক্ত রাশেদা বেগম জানান, শনিবার (১৬ জুলাই) সকালে তার শাশুড়ি তাকে দা নিয়ে কোপাতে আসেন। এতে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ওই ধারালো দা দিয়ে শাশুড়ির গলায় কোপ দেন তিনি। পরে মৃত্যু হলে মরদেহ ছয় টুকরো করে বস্তায় ভরে বাড়ির উঠানে মাটিচাপা দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন বলেন, নিহত সমতাজ বেগমকে কেটে ছয় টুকরো করা হয়েছে। শরীর থেকে মাথা, হাত-পা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরে বস্তাবন্দি করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। তবে তার ধারণা, একা একটা মেয়ের পক্ষে একজন মানুষকে ছয় টুকরো করে মাটিচাপা দেওয়া সম্ভব নয়।
নিহতের ছেলে আলমগীর বলেন, সকালে টিউবওয়েলে গেলে পাশে নতুন মাটি দেখতে পাই। এতে সন্দেহ হলে মাটি খুঁড়লে মায়ের শাড়ি বের হয়ে আসে। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের জানানো হলে তারা পুলিশে খবর দেয়।
তিনি বলেন, আমার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া ছিল ঠিক কিন্তু এভাবে হত্যা করবে এটা বিশ্বাস করতে পারিনি।
রামু থানার ওসি (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে রবিবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে রামু থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা অবস্থায় নিহত মমতাজ বেগমের লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু করে। সন্ধ্যায় ৬ টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে মাথা, ২ হাত এবং ২ পা বিচ্ছিন্ন। পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশেদা বেগমকে আটক করা হয়েছে।
অভিযুক্ত রাশেদা বেগম জানান, নিহত মমতাজ বেগমের সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি করে লাশ। পরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাড়ির টিউবওয়েলের পাশে বস্তাবন্দি করে লাশ মাটিচাপা দেন।
ওসি (তদন্ত) অরূপ বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
জানা গেছে, ৩ বছর পূর্বে নিহত মমতাজ বেগমের ছেলে আলমগীরের সাথে রাশেদা বেগমের বিয়ে হয়। এখনো তারা নিঃসন্তান। এছাড়া আটক রাশেদা বেগম মমতাজ বেগমের আপন ভাতিজি। রাশেদা বেগমের পৈত্রিক বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নে।