#morningtribune#bd#du

যে কৌশলে ঢাবি থেকে ব্যবসায়ীর ২০ লাখ টাকা ডাকাতি হয়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

গত ৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাঁতীবাজার থেকে ভাড়া করা একটি মোটরসাইকেলে করে নিউমার্কেটে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন। পথইমধ্যে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সামনে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তাঁর কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ঢাকার কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুরে তাঁকে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করেন তিনি।

চক্রের মূল হোতাসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে ডিবি। সেখানেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির রমনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্যরা ওই ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নেন।

ডিবি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন খানকে তাঁতীবাজার এলাকা থেকে অনুসরণ করেন ডাকাত দলের দুই সদস্য। তাঁরা একটি মোটরসাইকেলে করে মহিউদ্দিনকে বহন করা মোটরসাইকেলের পিছু নেন। এদিকে ডাকাত দলের আরও পাঁচ সদস্য আগে থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান নেন।শাহবাগ থানা–পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়া তদন্ত করছিল ডিবি রমনা বিভাগ।

ডিবি সূত্র আরও জানায়, ঘটনার দিন মহিউদ্দিন তাঁর যাত্রাবাড়ীর বাসা থেকে ১৪ লাখ টাকা নিয়ে তাঁতীবাজারে আসেন। সেখান থেকে শাঁখারী বাজারে গিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নিয়ে আবারও তাঁতীবাজারে আসেন তিনি। এরপরে ওই টাকা নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে তিনি নিউমার্কেটে যাচ্ছিলেন। তাঁতীবাজারে এই ডাকাত দলের দুজন তথ্যদাতা সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন। নগদ টাকা ও সোনার অলংকার নিয়ে কোনো ব্যবসায়ী সেখান থেকে বের হলে সেই তথ্য দলের অন্য সদস্যদের জানান। সে তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদেরই কেউ ব্যবসায়ীর পিছু নেন। এরপরে সুযোগ বুঝে পথ আটকে ডাকাতি করেন তাঁরা।

ডিবি জানায়, মহিউদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা দিয়ে নিউমার্কেটে যাবেন। নিউমার্কেট এলাকায় তাঁর একটি গহনা বিক্রির দোকান আছে। এটা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েই একটি সাদা মাইক্রোবাসে সেখানে অবস্থায় নেন ডাকাত দলের সদস্যরা। ডাকাতির সময় গাড়ির ভেতরে ছিলেন দুজন। গাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যবসায়ীকে গাড়িতে তুলে নেন তিনজন।

আরও পড়ুন

ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে ব্যবসায়ী অপহরণঃ ২০ লাখ টাকা ছিনতাই

মামলার নথিতে মহিউদ্দিন উল্লেখ করেন, একটি বাহিনীর স্টিকার লাগানো জলপাই রঙের একটি গাড়ি তাঁর পথ আটকে অপহরণ ও ২০ লাখ টাকা ডাকাতি করে। রাজধানীর নিউমার্কেটে রায়হান জুয়েলার্স নামে তার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। ঘটনার দিন বেলা একটার দিকে তিনি বাসা থেকে তাঁতীবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। দুইটার দিকে তাঁতীবাজার ২১ নম্বর মার্কেটে পৌঁছান। কাজ শেষে বেলা তিনটার দিকে তাঁতীবাজার মোড় থেকে ভাড়া করা এক মোটরসাইকেলে করে নিউমার্কেটের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের মূল ফটক থেকে ২০ গজ পূর্বে পাকা রাস্তার ওপর পৌঁছান মহিউদ্দিন।

মহিউদ্দীন বলেছিলেন , ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের মূল ফটকে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে একটি গাড়ি এসে আমাকে বহন করা মোটরসাইকেলের পথ রোধ করে। মোটরসাইকেল থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকান তিনজন। এরপরে গাড়িতে তুলে গামছা দিয়ে আমার চোখ বেঁধে ফেলা হয়।

ডাকাতদের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ডাকাতদের বয়স আনুমানিক ২৮-৩২ বছর। উচ্চতা আনুমানিক ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। গায়ের রং শ্যামলা। মাথার চুল ছোট করে কাটা। পরনে ছিল প্যান্ট, হাফহাতা গেঞ্জি ও হাফহাতা কোটি। ডাকাতেরা শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেন। তাঁদের দেখলে আমি চিনতে পারব।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *