যারা ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন বিভাগের ক্যাডার হয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে তা নিয়ে একটি সিরিজ প্রতিবেদন তৈরি করছে মর্নিং ট্রিবিউন। আজ হচ্ছে তার দ্বিতীয় পর্ব ।
আজকে আমাদের সাথে আছেন মোহাম্মাদ সালেইন যিনি ৪০ তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। এই প্রতিনিধির সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বসে নিজের অতীত কর্মজীবন আর অধ্যবসায়ের গল্প তারপর বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যে জার্নি আর তার আগামীর কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে বলছিলেন মোহাম্মাদ সালেইন । সম্প্রতি ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ বিভাগের ক্যাডার হয়েছেন তিনি।
মোহাম্মাদ সালেইন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্কেটবল টিমের অধিনায়ক। বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন বেড়ে উঠেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কাইতলা গ্রামে। খেলাধুলা আর পরিশ্রম করার অভ্যাসটা পেয়েছেন বাবার কাছ থেকে, আর জীবনের মূল্যবোধ শিখিয়েছেন মা। যিনি শহিদ বীর-উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা।
জীবনের মূলমন্ত্র ছিল হার্ড ওয়ার্ক নয় করতে হবে স্মার্ট ওয়ার্ক। আমি সব সময় ভাবি আমি সবচেয়ে খারপ ছাত্র আমাকে সবচেয়ে ভাল ফলাফলটা নিয়ে বের হতে হবে।যার জনয় আমাকে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হবে ।জীবনে একটা সময় পরিশ্রম করতে হয় আমি পরিক্ষার সময় অত্যন্ত পরিশ্রম করতাম,আমি এখন ফ্রি। আমিও চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখিনি। জীবনে সবার প্ল্যান এ ,বি থাকতে হবে। যেমন আমি ২০১৭ সালে মাস্টারস শেষ করার পরে আমি বসে থাকি নি বিভিন্ন স্বনামধন্য কোম্পানিতে জব করেছি। যাতে পিছিয়ে না থাকি। হলে ছিলাম না তাই তার লাইব্রেরিতে কিমি. যাওয়া হত কিন্তু বাসার রুম টাকে বানিয়েছিলেন পড়ার লাইব্রেরি। সবসময় রুটিন করে পড়তেন।তার একটা ভিন্নধর্মী রুটিন রয়েছে শান্তিকালীন,যুদধকালীন আর হচ্ছে সঙ্কটকালীন পরিস্থিতির পড়াশোনা। তার মূল কথা হল আমি যা উদ্দেশ্য করে বসেছি তা শেষ না করে উঠব না। তার কথার মধ্যে বারবার উঠে আসছিল তার সহধর্মিণীর কথা যিনি কিনা একসময় তার বিভাগের সহপাঠী ছিলেন। তিনি যখনই কোন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছেন তখনই পাশে পেয়েছেন তার সহধর্মিণীকে।
তিনি জিমে নিয়মিত শরীর চর্চা করতেন কারন পড়ালেখাতে যাতে একঘেয়ামি না আসে।
এসএসসি ও এইচএসসি সম্পন্ন করেছিলেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে । তারপর ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমেস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগে। তার একাডেমিক ফলাফলে তিনি তার মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।
বিসিএস প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, আমি বিসিএস এর পড়া শুরু করেছি মাস্টার্সের থিসিস শেষ করার পর। বিসিএস এ শর্টকাট বলতে কিছু নাই।ধৈর্য হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়। সবাই বাংলা, সাধারণ জ্ঞাণ শুরু করলেও আমি গণিত ও মানসিক দক্ষতা , বিজ্ঞান,ইংরেজি, ভূগোল দিয়ে শুরু করেছিলাম। গণিত, বিজ্ঞান,ইংরেজিতে ভাল দক্ষতা ছিল টিউশনি করানোর কারনে। লিখিত পরীক্ষায় কোন বিষয়ে দুর্বলতা থাকলে যে বিষয়টাতে ভাল দক্ষতা আছে সেটাতে সবচেয়ে ভাল প্রস্ততি নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় অবহেলা করা যাবে না।
তার সবচেয়ে বড় পরামর্শ হচ্ছে একাডেমিক রেজাল্ট খারাপ করা যাবে না প্রথমবর্ষ থেকে বিসিএসের প্রস্ততি নিতে গিয়ে, কারন ভাইভা বোর্ডে যদি জিজ্ঞাসা করা রেজাল্ট খারাপ হবার কারন কি ? তখন যদি উত্তর সন্তুষ্টজনক না হলে ভাইভাবোর্ডে থাকা স্যাররা অসন্তষ্ট হতে পারেন। কারন তাদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি তাদের মনগড়া উত্তর দিলে তারা বুজতে পারবে।
ভাইভাতে আপনার সব কিছু খেয়াল করা হবে, আপনার আচরণ, ড্রেস সেন্স,কথা বলার ধরন। আপনাকে আপনার নিজের যত্ন নিতে হবে। যারা ভাইভা বোর্ডে থাকবেন তারা সবাই অনেক অভিজ্ঞ। আপনি তাদের সামনে কোন অভিনয় করলে তারা তা বুঝতে পারবেন আর সবসময় ভালোর চর্চা করতে হবে।
যখন পরামর্শ চাওয়া হয় তখন তিনি বলেন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষাটা সবচেয়ে ভাল করে নিতে হবে কারন এটার উপর বাকি বাকি ধাপগুলো নির্ভর করে।
কর্মক্ষেত্র নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে নিজেকে একজন দক্ষ পুলিশ অফিসার হিসাবে দেখতে চাইও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার একজন অংশীদার হতে চাই