খাটে শুয়ে মোবাইল টিপছেন ছাত্রলীগ নেতা, আর তার পা টিপছেন দুই কর্মী, এমন একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে খাটে শুয়ে দুই যুবকের কোলে যিনি পা তুলে দিয়ে আরামে মোবাইল স্ক্রল করছেন তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। আর, যে দুই যুবককে পা টিপতে দেখা যাচ্ছে তারা চবি ছাত্রলীগের পদধারী নেতা।
আজ সোমবার এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে সমালোচনা। যদিও ছবিটা ঠিক কখন তোলা হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউই।
শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষের চিত্র এটি। এই কক্ষে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রেজাউল হক রুবেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি স্নাতক পাস করেন ২০১০ সালে। স্নাতকোত্তর পাস করেছেন ২০১৩ সালে। আর ২০১৯ সালে ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। সভাপতির মেয়াদ এক বছর হলেও তিনি এখনো এই পদে রয়ে গেছেন। তাঁর শিক্ষাবর্ষের অন্য শিক্ষার্থীরা অন্তত ৯ বছর আগে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও হয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগ সভাপতি বিভিন্ন সময় তার কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। তবুও তিনি কখনো নিজেকে শুধরাননি। তাছাড়া কর্মীরা বেশিরভাগ তার ৮/১০ বছরের ছোট, তাহলে এমন কাজ তো করানোই স্বাভাবিক। নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা না থাকায় এরকম সেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কেউই ছাত্র থাকা অবস্থায় নেতৃত্বের সুযোগ পান না। তাই ছাত্রলীগের অনুসারীরা ধরেই নিয়েছেন নেতৃত্বে আসতে হলে ক্যাম্পাসে ৮-১০ বছর থাকতে হবে কমপক্ষে। আমাদের এ জায়গাগুলোতে পরিবর্তন আনা উচিৎ।
পা টেপার বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, রুবেল ভাই অসুস্থ ছিলেন। আমরা ওনার পায়ে মলম লাগিয়ে দিয়েছি। পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে অন্যরা যেমন সেবা করেন, এটাও তেমন। ছবিটা কখনকার জানতে চাইলে তিনি জানান, এটা এক থেকে দেড় বছর আগের তোলা।
একই কথা বললেন সভাপতি রেজাউল হক রুবেলও। তিনি মর্নিং ট্রিবিউনকে বলেন, ছবিটি দুই থেকে আড়াই বছর আগের। আমি অসুস্থ ছিলাম। আমার দুই ছোট ভাই আমার সেবা করতেছিল।