আরাফাত

ঢাবি ছাত্রীর অপহৃত বাবাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল আরাফাত

ঢাবি প্রতিনিধিঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের ছাত্রী সমাপ্তি রায় বণিকের বাবা শিবানন্দ রায় বণিককে গত শুক্রবার রাত ১০টায় মুখোশধারী ডাকাতদল তার মালিকানাধীন স্বর্ণ দোকান লুট করা শেষে অপহরণ করে নিয়ে যায়।গত শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে প্টুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরের মার্চেন্টপট্টি এলাকায় শিবু বণিকের দোকানের দুই কর্মচারীকে বেঁধে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট ও এই ব্যবসায়ীকে ট্রলারে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। শিবু বণিক কয়েকটি কোম্পানির পণ্যের পরিবেশক ছিলেন।

এ বিষয়ে সহয়তা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ” গ্রুপে পোস্ট করেন ঢাবি ছাত্রী সমাপ্তি রায় বণিক। বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা মঞ্চের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আরাফাত চৌধুরীর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি  তাৎক্ষণিকভাবে পটুয়াখালী জেলার এসপি আনোয়ার জাহিদকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন।

পটুয়াখালী জেলার এসপি আনোয়ার জাহিদ “টপ প্রায়োরিটি কেইস” হিসেবে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কয়েকটি টিমকে তদন্তকার্যে বিশেষভাবে নিযুক্ত করেন। পাশাপাশি দুইজন এডিশনাল এসপি এবং একজন এএসপির নেতৃত্বে তিনটি পৃথক টিম গঠন করে দ্রুত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশনা দেন এসপি।

পরবর্তীতে পুলিশ ট্রলার নিয়ে নদীতে ও বাউফল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ৪৮ ঘণ্টার নিরবিচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনার প্রেক্ষিতে তাকে সুস্থ ও অক্ষত উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার হওয়া অপহরণকারীরা
গ্রেফতার হওয়া অপহরণকারীরা

এখন পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার বালিগোনা গ্রামের আকবর শরীফের ছেলে মো. মাসুদ শরীফ (২৪), ভোলা জেলার দক্ষিণ আইচা উপজেলার পাচুকিয়া গ্রামের জাকির সিকদারের ছেলে মো. মাহফুজ, বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউনিয়নের বড় ডামিলা গ্রামের মিন্টু মৃধার ছেলে মিরাজ মৃধা (২০), মো. বাবুল প্যাদার ছেলে মো. জহির প্যাদা (২৭) এবং গকুল চন্দ্র মিস্ত্রীর ছেলে বিধান চন্দ্র মিস্ত্রী (২২)।

এ সময় অপহরণ এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত, দেশীও অস্ত্রসহ লুণ্ঠিত এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৮০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ডাকাত দল চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন থেকে নৌকা ভাড়া করে গত ৩ জানুয়ারি রাতে কালাইয়া বন্দরের মার্চেন্টপট্টি প্রবেশ করে। এ সময় শিবু বনিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে অস্ত্রের মুখে দোকানের কর্মচারীদের জিম্মি করে। পরে শিবু বনিককে তুলে নিয়ে যায়। ওই রাতেই তাকে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউপির কচুয়া চরের একটি পরিত্যক্ত বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শিবু বনিককে দুই দিন আটকে রেখে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।

পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ বলেন, কচুয়া চরের একটি পরিত্যক্ত বাসা থেকে শিবু বনিককে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাউফল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তদন্তের মাধ্যমে আরও কারও সপৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হবে।

মর্নিং ট্রিবিউনের অফিসিয়াল ফেসবুক লিংক

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী সমাপ্তি রায় বণিক বলেন,গত দুইদিন আমাদের পরিবারের সকলে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিল।আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম,কারণ বাবার বয়স হয়েছে ৭৬ এবং বাবা হার্টের রোগী ছিলেন।আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপে পোস্ট করার সাথে সাথেই আরাফাত চৌধুরী ভাই আমার সাথে যোগাযোগ করে এবং ঘটনার শুরু থেকেই ভাই পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার,বরিশাল রেঞ্জের রেঞ্জ ডিআইজি সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন আমারে বাবাকে দ্রুততম সময়ের মাঝে উদ্ধার করার জন্য।আরাফাত ভাই সার্বক্ষণিক আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন,আমাদের আশ্বস্ত করেছেন বারংবার।আমাদের পরিবারের এই বিপদের দিনে ভাই অনেক হেল্প করেছেন।আমি ও আমার পরিবার আরাফাত ভাইয়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

উদ্ধার হওয়া ঢাবি ছাত্রীর বাবা শিবানন্দ রায় বণিক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আরাফাত চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্ম “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা মঞ্চে” এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তা প্রদান করে তিনি সকল শিক্ষার্থীর আস্থা অর্জন করেছেন।পাশাপাশি তিনি সমগ্র দেশব্যাপী সাইবার নিরাপত্তা ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ নিয়ে নিয়ে কাজ করা সংগঠন “সাইবার এইড বাংলাদেশ” এর চিফ লিগ্যাল এডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ছাত্র আমজাদ হোসেন বলেন, ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স পরিবারের জন্য এটি একটি স্বস্তির খবর।আরাফাত চৌধুরী ভাইকে সবসময় দেখেছি ঢাবি শিক্ষার্থীদের যে কোন বিপদে তিনি সহযোগিতা করেন।যে কোন সমস্যা নিয়ে ভাইয়ের কাছে গেলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ইতিবাচক রেসপন্স করেন এবং আন্তরিকতার সাথে সমাধানের ব্যবস্থা করে দেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *