ঢাবি প্রতিবেদক
পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা ও ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে।
বুধবার (২৯ মার্চ) বাংলা নববর্ষ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভা থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, প্রক্টর, অফিস প্রধান এবং বিভিন্ন সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছর ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রা শাহবাগ মোড় হয়ে ফের চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে। নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় জনসমাগম সীমিত রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
যা করা যাবে না
পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোন ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদের তৈরি মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো এবং বিক্রি থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নববর্ষের দিন সব ধরনের অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে।
নববর্ষের আগের দিন ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না ক্যাম্পাসে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোন ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। ক্যাম্পাসে বসবাসরত ব্যক্তিরা নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেইট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।
নববর্ষের দিন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্যের পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগত ব্যক্তিবর্গ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদের সম্মুখস্থ ছবির হাটের গেইট, বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বের হওয়ার পথ হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেইট, রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেইট ও বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট ব্যবহার করা যাবে।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশে-পাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।
সভায় নববর্ষের দিন নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করে তা মনিটরের জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে ২৪-সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এই কমিটির সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
সভায় কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে ২টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এগুলো হচ্ছে- শৃঙ্খলা উপ-কমিটি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটি। ১২-সদস্যবিশিষ্ট শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং সদস্য-সচিব সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. লিটন কুমার সাহা। ৩২-সদস্যবিশিষ্ট মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহ্বায়ক চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং সদস্য-সচিব সহকারী প্রক্টর মো. নাজির হোসেন খান।