#dmc

ঢামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

ঢামেক প্রতিনিধিঃ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. সাজ্জাদ হোসেনকে মারধরের ঘটনার বিচার দাবিতে চলা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

রোববার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে ঢামেকের প্রশাসনিক ব্লকের কনফারেন্স রুমে প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) ঢামেক শাখার সভাপতি ডা. মো. মহিউদ্দিন জিলানী এ ঘোষণা দেন। এসময় আজ থেকেই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানান তিনি।

বৈঠক শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে উভয়পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে কর্মবিরতি প্রত্যাহার এবং আজ থেকেই কাজে যোগদান করবেন বলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয় সেই আহ্বানও জানান তিনি।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মো. টিটু মিয়া, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ইকবাল আর্সেনাল, গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, ঢাবি প্রশাসন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকসহ ইন্টার্ন চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মওদুদ আহমেদ বলেন, আমরা সিসিটিভির ফুটেজ যতটুকু পেয়েছি তা নিয়ে তদন্ত চলছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে একটি গেঞ্জি পেয়েছিলাম, সেটি ঢাবির বিজয় ৭১ হলের ছিল, কিন্তু সেটি দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করি কিছুদিনের মধ্যেই একটা রেজাল্ট দিতে পারবো।

ভুক্তভোগী ইন্টার্ন চিকিৎসক একেএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার এই অবস্থা দেখে আমি অবাক।’

ঢাবি শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ডের দায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ নেবে না- ঢাবির সহকারী প্রক্টরের দেওয়া এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘ঢাবিতে ১ম বর্ষে যারা ভর্তি হয় তখনই তাদের ব্রেইন ওয়াশ করা হয় যে, শহীদ মিনার জায়গাটা ঢাবির। বুয়েট বা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গে তো কখনো এমন ঘটনা ঘটে না। ঢাবির সঙ্গে কেন এমন হয়? তাদের উশৃঙ্খলতা শিক্ষা দেওয়া হয়। তাদের সুশিক্ষা না দেওয়া হলে এমন ঘটনা ঘটবেই।’

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সনাল বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। আর এই ঘটনার বিচার আদায়ের দায়িত্ব আমরা নিলাম। তারা ঢাবির ছাত্র হলে ঢাবি শাস্তি নিশ্চিত করবে আর ছাত্র না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা নিশ্চিত করবে।’

স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসক তাদের বিচারের দাবিতে কর্মবিরতি দিয়ে এটি অন্যায় কিছু করেনি। শহীদ মিনার কারও সম্পত্তি না। ঢামেক ছাত্ররাই সর্বপ্রথম এটি তৈরি করেছিল। পরবর্তীতে এর দায়িত্ব ঢাবিকে দেওয়া হয়। এটি জাতীর সম্পদ। এখানে বহিরাগত বলতে কিছু নেই।’

সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এতে পরিবারিক শিক্ষার অভাবও থাকতে পারে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের শাস্তি পেতে হবে।’

এর আগে, ৮ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢাকা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসক একেএম সাজ্জাদ হোসেন মারধরের শিকার হন। তিনি অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দেওয়া ও ঢাবির টি-শার্ট পড়া কয়েকজন যুবক তার পরিচয় জানতে চায়। ইন্টার্ন চিকিৎসকের পরিচয় দেওয়ার পরও তারা তাকে ব্যাপক মারধর করে।

এরপর দিন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। ৪৮ ঘণ্টায় কোনো সুরাহা না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বেলা ১২টা থেকে শুরু হয় তাদের কর্মবিরতি।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *