
ঢাবি প্রতিনিধিঃ
আষাঢ় পেরিয়ে এসেছে শ্রাবণ । শ্রাবণের এই মেঘ এই বৃষ্টি এই রোদের ধ্রুপদী ছন্দ যেন আরেক নিসর্গ। এর মধ্যেই কখনও অবারিত বারিধারা। ঋতু ক্যানভাসে রোমান্টিকতা ও মধুর বেদনা এঁকে দিয়েছে। আকাশে সূর্যালোকের অল্পবিস্তর বিচ্ছুরণে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সে ওঠে রঙধনুশরৎ এসেছে আর তার আগমনী উৎসব হবে না তা যেন অনেকটা বেমানান।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পায়রা চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়ধ্বনি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে পালিত হয় শরৎ উৎসব ১৪২৯। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. আখতারুজ্জামান।নেচে গেয়ে নৈসর্গিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ ঋতু শরৎকে বরণ করে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান শরতের আকাশ থেকে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার শিক্ষা নিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, শরতের আকাশ অনেক স্বচ্ছ ও অনেক উঁচু থাকে। অন্য যেকোন সময়ের থেকে শরতের আকাশ অনেক গভীর হয়। যখন একটি পরিচ্ছন্ন আকাশ হয় তখন আমাদের দৃষ্টিসীমা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে অনেক দূরে চলে যায়। তাই আকাশের উচ্চতা যেন আমাদের মনের গভীরতাকে আরো প্রশস্ত করে সেটি হবে আমাদের একটি বড় প্রত্যয়। এই শরৎ যেন কখনো বিষণ্ন না হয়, এটা যেন অক্ষুণ্ন থাকে সেদিকে আমাদের সবারই নজর দিতে হবে।
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে যারা আমাদের আঘাত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে দেশের তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ থাকার শপথ আজ এ শরৎ উৎসবের মধ্য দিয়ে গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেমন একাডেমিক দিনপঞ্জি রয়েছে, তেমনি এমন একদিনের প্রত্যাশা রাখি যেদিন একাডেমিক দিনপঞ্জির মতো একটি সাংস্কৃতিক দিনপঞ্জিও থাকবে। সেটিও একাডেমিক দিনপঞ্জির মতো গুরুত্ব পাবে।

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, প্রকৃতি আমাদের যে সম্ভার দিয়েছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা তাকে ধ্বংস করতে প্রতিনিয়তই ব্যস্ত আছি। আজকে বন উজাড় করা হচ্ছে। বৃক্ষ নিধন করে শিল্পোন্নত দেশগুলো অতিরিক্ত মাত্রায় কার্বন নিঃসরণ করে প্রকৃতির বিপর্যয় ডেকে এনেছে। আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা আছে তাই দিয়ে হলেও প্রকৃতিকে বাঁচাতে হবে।
আলোচনা পর্ব শেষে জয়ধ্বনি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে কেউ কবিতা আবৃত্তি করে, কেউ গান গেয়ে কিংবা একক ও দলগত নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে শরৎকে স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগীত বিভাগের সহযোগী আধ্যাপক ড. দেবপ্রসাদ দা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জয়ধ্বনির সভাপতি শাহরিয়ার কবির অপূর্ব, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক পার্থ সরকার, ও সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক সুজন শর্মা, ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।