ইউরোপের বলকান অঞ্চলের দুই স্বাধীন দেশ সার্বিয়া,কসোভো এবার যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকবার গুলিবিনিময় হয়েছে, উত্তেজনা রয়েছে চরমে৷ ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে স্বাধীন হওয়া একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ কসোভো৷ কসোভোর জনসংখ্যার আবার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ জাতিগতভাবে সার্ব যারা কসোভোর স্বাধীনতা মানাতো দূর নাগরিক সনদপত্রও নেয়না ৷ এরা সর্বদা কসোভোকে সার্বিয়ার অংশ হিসেবে কল্পনা করে, যেকোনো মূল্যে সার্বিয়ায় যোগ দিতে চায়৷
জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত অধিকাংশ দেশ কসোভোকে স্বীকৃতি দিলেও দেয়নি রাশিয়া, সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরাধিকারী এই দেশটি কসোভোকে সার্বিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মানে । এবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিপক্ষে কসোভোকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করেন৷ এদিকে কসোভোর প্রধানমন্ত্রী আলভিন কূর্তী উক্ত ঘটনার জন্য দায়ী করেছের সার্ব রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার ভুচিচকে৷ পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে, অচিরেই ইউরোপের এই ফ্রন্টেও যুদ্ধের দামামা শুরু হয়ে যেতে পারে৷ তাহলে বলকানের এই অঞ্চলটিতে সার্বদের হাতে সহিংসতার শিকার হতে পারে কসোভোর মুসলিমরা যার পরোক্ষ নেপথ্যে রাশিয়াই থাকবে৷ উল্লেখ্যঃ আগামী এক আগস্ট থেকে কসোভোয় বসবাসকারী সকলকেই কসোভোর নাগরিক সনদপত্র ব্যবহার করতে হবে মর্মে এক আইন জারি করে এবং এতেই ক্ষুব্ধ হয় দেশটিতে থাকা সার্বরা। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে, এদেরকে সাহায্য করা ও ইন্ধন যোগানোর জন্য কসোভো দায়ী করছে সার্বিয়াকে ৷
বলকান অঞ্চলে অবস্থিত এই দেশটির সর্বমোট আয়তন ১০৮৮৭ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষের মতো৷ দেশটিতে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ আলবেনীয় মুসলিম, ৪ শতাংশ জাতিগতভাবে সার্ব, বাকিরা নৃগোষ্ঠীগত দিক থেকে বসনিয়ান,তুর্কিদের অন্তর্ভুক্ত। একটা বৃহৎ সময় অটোমান সাম্রাজ্যের অংশ থাকা এই দেশটি বলকান যুদ্ধের পর সার্বিয়া এবং মন্টেনেগ্রোর সাথে যুগোস্লাভিয়ার অংশ হয়ে যায়৷ যুগোস্লাভিয়া ভাঙার পর সার্বিয়ার সায়ত্তশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়৷ সেখান থেকে ১৯৯৯ সালে কসোভো যুদ্ধের মাধ্যমে কার্যত একটি আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত হয় এবং ২০০৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে৷
অপি করিম
আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷