নাজিম উর রহমান
আগামী নভেম্বরে মিসরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কপ–২৭ জলবায়ু সম্মেলন। এ সম্মেলন সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, বিকেল চারটায় জলবায়ু সচেতন শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফর ক্লাইমেট একশন’ এর আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে কপ ২৭ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করা হয়।
প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উক্ত অনুষ্ঠানে নয়টি প্রস্তাব পড়ে শুনানো হয় যেগুলো হলঃ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে স্থানীয় প্রতিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নবায়নযোগ্য ও টেকসই জ্বালানির ওপর জোর দেয়া, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক নিয়ামকগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিত করা, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সকল উদ্যোগে নারীর সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নের দিকে মনোযোগ দেয়া, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বনভূমি ও বৃক্ষ সংরক্ষণ, জলবায়ুপরিবর্তন সংক্রান্ত সকল পরিকল্পনায় স্থানীয় জ্ঞানের ব্যবহার এবং ভুক্তভোগী সংজ্ঞায়নে স্থানীয় চিহ্নিতকরণ, মৌলিক মানবাধিকারের মত মৌলিক জলবায়ুঅধিকার প্রণয়ন, জলবায়ু শরণার্থী এবং গণহত্যার মত প্রতিবেশের পরিকল্পিত ধ্বংসকে ‘ইকোসাইড’ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য, পরিসংখ্যান ও জরিপের ফলাফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবংদূষণকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সরকারকে শক্তিশালী করা।
অনুষ্ঠানে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফর ক্লাইমেট একশন’ প্লাটফর্মের আহবায়ক ইসতিয়াক নূর মুহিত বলেন, “জলবায়ু বিপর্যয়ের জন্য একসাথে এবং এখনই উদ্যোগ নিতে হবে এবং নিষ্ঠার সঙ্গে ভুক্তভোগীদের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে”। অনুষ্ঠানের অপর বক্তা ফেরদৌস সিদ্দিক সায়মন বলেন, “যুগে যুগে বিভিন্ন সংকটের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছে, সেভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জলবায়ু সংকটেও পথ দেখাবে”।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ আবিদুর রহমান (মিশু) এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের অপর বক্তা রাফিয়া রেহনুমা বলেন, “উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বৈশ্বিক এই জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে আমাদের দায় ততটা না থাকলেও, এর প্রভাবগুলো আমাদের জীবনেই সবচেয়ে তীব্র। তাই কপ সম্মেলনে আমাদের কন্ঠ সোচ্চার হওয়া সবচেয়ে জরুরি”।
উল্লেখ্য যে, বিগত দুই মাস ধরে এই প্রস্তাবটি তৈরী করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতামত নিতে কাজ করেছে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফর ক্লাইমেট একশন’ এবং গত ২৩ অক্টোবর টিএসসিতে একটি উন্মুক্ত আলোচনা সভারও আয়োজন করেছে। প্রায় দেড়শত শিক্ষার্থীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে এই নয়টি প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে পরিবেশ অধিদপ্তর, কপ ২৭, জাতিসংঘ জলবায়ু তহবিল সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট প্রস্তাবটির অনুলিপি প্রেরণ করা হয়।