নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে হাতিরঝিল থানা হেফাজতে আসামির মৃত্যুর ঘটনায় এরই মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
পুলিশের হেফাজতে নিহত রুম্মন শেখ ওরফে সুমনের (২৭) স্ত্রী জান্নাত অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমার স্বামীকে গতকাল (শুক্রবার) রাতে পুলিশ মেরে ফেলেছে। কিন্তু আজ সকালেও আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছে।’
নিহতের স্ত্রী জান্নাত বলেন, ‘আমার স্বামী ইউনিলিভার কোম্পানির পিওরইট ওয়াটার ফিল্টারের ডেলিভারির ভ্যানচালক ছিল। আমরা কীভাবে পাঁচ লাখ টাকা দিব? অথচ অফিসের ম্যানেজার মাসুম পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। সে বলেছে, টাকা ছাড়া পুলিশ কোনো কিছু করবে না। টাকা দিলেই তাকে ছেড়ে দিবে।’
স্বামীর মৃতুতে আহাজারি করে জান্নাত বলেন, ‘আমরা থাকি রামপুরা থানা এলাকায়। তার (স্বামী) অফিসও রামপুরায়। তাকে গ্রেপ্তার করলে রামপুরা থানা করবে। হাতিরঝিল থানায় তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তারা কেন আটক করবে? আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’ এই বলেই বুক চাপড়ে কাঁদতে থাকেন সুমনের স্ত্রী জান্নাত।
হাতিরঝিল থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং প্রমাণ লোপাট করতে একই প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক চুরির অভিযোগে সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মামলাটির তদন্ত করছেন হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আদনান বীন আজাদ। গত ১৯ আগস্ট তিনিই সুমনকে বাসা থেকে আটক করেন।
এরপর থানা হেফাজতে সুমনে মৃত্যু হয়। আজ বিকেল ৫টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে সুমনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে সুমনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে হাতিরঝিল থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন স্বজনেরা।
রাত ৮টার দিকেও হাতিরঝিল থানার সামনে স্বজনদের অবস্থান করতে দেখা যায়। সন্তান হারিয়ে থানার সামনে আহাজারি করতে দেখা যায় সুমনের মা আমেনা আক্তারকে।